বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস ক্রমেই সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে তিনি এখনও হাসপাতালেই আছেন এবং তার চিকিৎসা চলছে। শনিবার (১৫ মার্চ) এক বিবৃতিতে পোপের স্বাস্থ্যের সবশেষ অবস্থা জানায় ভ্যাটিকান।
ভ্যাটিকানের বিবৃতি অনুসারে, পোপ ফ্রান্সিস রোমের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুস্থ হয়ে উঠছেন। কিন্তু এখনও তার চিকিৎসার প্রয়োজন।
হলি সি প্রেস অফিসের তথ্য অনুযায়ী, পোপের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। গত সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে এবং ‘উচ্চ-প্রবাহের অক্সিজেন থেরাপি অব্যাহত রয়েছে, যা রাতের বেলায় ভেন্টিলেটরের প্রয়োজনীয়তা ক্রমান্বয়ে কমে আসছে।’
ভ্যাটিকান আরও জানায়, ‘বাবার এখনও হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি ও শ্বাসযন্ত্রের থেরাপির প্রয়োজন। এই থেরাপিগুলোর ফলে বর্তমানে ধীরে ধীরে তার স্বাস্থ্যের উন্নতি দেখা যাচ্ছে।’
ফুসফুসের জটিল সংক্রমণ নিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ৮৮ বছর বয়সি পোপ ইতালির রোমে অবস্থিত জেমেলি হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর প্রায় এক মাস ধরে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। তবে এর মাঝেও তিনি তার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, যা ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের প্রতি তার অটল প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
প্রথম তিন সপ্তাহ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছিল, যার মধ্যে শ্বাসকষ্ট, কিডনির সমস্যা ও তীব্র কাশি দেখা দিয়েছিল। তবে এরপর তার অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে বলে জানায় ভ্যাটিকান।
চিকিৎসকদের মতে, পোপ এখন আর গুরুতর সংকটাপন্ন নন, যদিও বয়স, নড়াচড়ার অসুবিধা এবং তরুণ বয়সে তার ফুসফুসের একটি অংশ হারানোর কারণে তার পরিস্থিতি এখনও জটিল।
পোপ ফ্রান্সিস তার অসুস্থতার মধ্যেও ক্যাথলিক চার্চের সংস্কার প্রকল্পের ওপর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি তিন বছরব্যাপী একটি পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছেন, যার লক্ষ্য রোমান ক্যাথলিক চার্চকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গ্রহণযোগ্য করে তোলা। ভ্যাটিকানের বিশপদের সিনড অফিস জানিয়েছে, ২০২৮ সালের মধ্যে এই সংস্কারের ধাপগুলো সম্পন্ন হবে।
হাসপাতালে থেকেই তিনি লেন্টেন স্পিরিচুয়াল অনুশীলনে অংশ নিয়েছেন, যা তার জন্য অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক কর্মসূচি হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) পোপ হিসেবে দ্বাদশ বর্ষপূর্তিতে তিনি একটি কেক ও শত শত শুভেচ্ছাবার্তা পান, যা তার প্রতি বিশ্বব্যাপী মানুষের ভালোবাসার প্রতিফলন।
তবে পোপের বর্তমান শারীরিক অবস্থার কারনে জনসমক্ষে আসা নিষেধ রয়েছে। তার হাসপাতাল ভর্তির পর থেকে চারটি রোববার তিনি ঐতিহ্যগত আশীর্বাদ ঘোষণা করতে পারেননি। সাধারণত তিনি সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারের জানালা থেকে বিশ্ববাসীকে আশীর্বাদ দেন, তবে সম্প্রতি তা লিখিত বার্তা হিসেবে প্রকাশ করা হচ্ছে।